জাফলং ভ্রমণ বিস্তারিত

জাফলং ভ্রমণ বিস্তারিত
সিলেট শহর থেকে ৬২ কিলোমিটার উত্তর-পূর্ব দিকে অবস্থিত গোয়াইনঘাট উপজেলার অন্তর্গত একটি পর্যটনস্থল হলো জাফলং।পাহাড় আর নদীর অপূর্ব সম্মিলনে ভারতের মেঘালয় সীমান্ত ঘেঁষে খাসিয়া-জৈন্তা পাহাড়ের পাদদেশে অবস্থিত এই এলাকা বাংলাদেশের অন্যতম একটি পর্যটনস্থল হিসেবে পরিচিত। পর্যটনের সাথে জাফলং পাথরের জন্যও বিখ্যাত।জাফলং-এর বাংলাদেশ সীমান্তে দাঁড়ালে ভারত সীমান্ত-অভ্যন্তরে থাকা উঁচু উঁচু পাহাড়শ্রেণী দেখা যায়। এসব পাহাড় থেকে নেমে আসা ঝরণা পর্যটকদের অন্যতম আকর্ষণ। এছাড়া ভারতের ডাউকি বন্দরের ঝুলন্ত সেতুও আকর্ষণ করে অনেককে।এছাড়া সর্পিলাকারে বয়ে চলা ডাওকি নদীও টানে পর্যটকদের। মৌসুমী বায়ুপ্রবাহের ফলে ভারত সীমান্তে প্রবল বৃষ্টিপাত হওয়ায় নদীর স্রোত বেড়ে গেলে নদী ফিরে পায় তার প্রাণ, আর হয়ে ওঠে আরো মনোরম। ডাওকি নদীর পানির স্বচ্ছতাও জাফলং-এর অন্যতম আকর্ষণ।
জাফলং ভ্রমনের স্থান সমূহ :
খাসিয়া-জৈন্তা পাহাড়ের পাদদেশে অবস্থিত এই এলাকা বাংলাদেশের অন্যতম একটি পর্যটনস্থল। জাফলং প্রকৃতির কন্যা হিসেবে পরিচিত। একেক ঋতুতে একেক রকম রূপ ছড়ায় জাফলং।পাথরের ওপর বয়ে চলা পিয়াইন নদীর স্বচ্ছ পানির বয়ে চলা,ডাউকি ঝুলন্ত ব্রিজ ,উঁচু উঁচু পাহাড়ে সদর মেঘের ভেলা জাফলং কে করেছে অন্যতম। জাফলং ও এর আসে পাশে ভ্রমণের অনেক জায়গা রয়েছে যেমন :
রাতারগুল
জাফলং
মায়াবী ( সম্রাট পুঞ্জি ঝর্ণা )
ভোলাগঞ্জ সাদা পাথর।
রাংপানি
মালিনীছড়া চা বাগান।
আগুন পাহাড়।
হযরত শাহাজালাল (রঃ) ও শাহ পরাণ ( রঃ) মাজার।
জাফলং:বাংলাদেশের সিলেট জেলার দর্শনীয় স্থান সুমুহের মধ্যে জাফলং অন্যতম। বাংলাদেশের সিলেট জেলার গোয়াইনঘাট উপজেলায় অবস্থিত যা সিলেট শহর থেকে ৬২ কিলোমিটার উত্তর-পূর্ব দিকে, ভারতের মেঘালয় ঘেঁষে খাসিয়া-জৈন্তা পাহাড়ের পাদদেশে অবস্থিত।জাফলং এ শীত,বর্ষা মৌসমে ভিন্ন রূপ ধারণ করে। বর্ষায় জাফলং তার জীবন ফিরে পায়। নিজস্ব রূপে সজ্জিত হয়ে ওঠে। মেঘালয়ের পাহাড়ের ফাঁকে সাদা মেঘের অপরূপ ভেলা মেঘালয় এর পাহাড় থেকে ছুটে আসা ঝর্ণা যেন তার রূপের পসরা সাজিয়ে বসে। আবার শীতে জাফলং এর সৌন্দর্য থাকে ভিন্ন। সবুজ পাহাড়ে ঘিরে থাকে। তাই দুই মৌসমেই জাফলং এ ভ্রমণ করা যাই।
রাতারগুল:বাংলাদেশের একমাত্র সোয়াম্প ফরেস্ট হলো রাতারগুল সোয়াম্প ফরেস্ট।রাতারগুল সিলেটের সুন্দরবন নাম খ্যাত। রাতারগুল জলাবন সিলেটের গোয়াইনঘাটে অবস্থিত বাংলাদেশের একটি মিঠাপানির জলাবন।পৃথিবীতে মিঠাপানির যে ২২টি মাত্র জলাবন আছে, “রাতারগুল জলাবন” তার মধ্যে অন্যতম।এই জলাবনের আয়তন ৩,৩২৫.৬১ একর।জলে নিম্নাংঙ্গ ডুবিয়ে দাঁড়িয়ে থাকা বনের গাছগুলো দেখতে বিভিন্ন সময়, বিশেষ করে বর্ষা মৌসুমে এখানে ভিড় করেন পর্যটকগণ। ডিঙি নৌকা নিয়ে বনের ভিতর ভ্রমণ করতে হয়। সিলেটের স্থানীয় ভাষায় মুর্তা বা পাটি গাছ “রাতা গাছ” নামে পরিচিত। সেই রাতা গাছের নামানুসারে এ বনের নাম রাতারগুল।রাতারগুল কে অনেকেই বাংলাদেশের আমাজান বলে অভিহিত করেন।
মায়াবী ( সম্রাট পুঞ্জি ঝর্ণা ):সংগ্রামপুঞ্জি ঝর্ণার স্থানীয় নাম মায়াবী ঝর্ণা। জাফলং জিরো পয়েন্ট থেকে ভারতের সীমান্তে অবস্থিত মায়াবী ঝর্ণাতে যেতে মাত্র ১৫ থেকে ২০মিনিট সময় লাগে।মায়াবী এই ঝর্ণা মূলত ভারতীয় ভূখন্ডে পড়েছে। তারপরও বিএসএফ এর অনুমতিতে সেখানে বাংলাদেশিরা ভ্রমণ করতে পারে। সংগ্রামপুঞ্জি ঝর্ণার ৩টি ধাপের শেষ ধাপে রয়েছে একটি রহস্যময় গুহা/সুড়ঙ্গ । এই গুহাটি মূলত জাফলং এর জিরো পয়েন্টের কাছে।
ভোলাগঞ্জ সাদা পাথর:সিলেট নগরী থেকে ৩৫ কিলোমিটার দূরত্বে সীমান্তবর্তী উপজেলা কোম্পানীগঞ্জ। সিলেটে পাথরের স্বর্গরাজ্য হিসেবে খ্যাত ভোলাগঞ্জ পাথর কোয়ারির জিরো পয়েন্ট সংলগ্ন নতুন পর্যটন স্পট হিসেবে খ্যাতি লাভ করেছে ‘সাদা পাথর’ নামক স্থানটি। যতদূর চোখ যায় দুইদিকে কেবল সাদা পাথর, মাঝখানে স্বচ্ছ নীল জল আর পাহাড়ে মেঘের আলিঙ্গন। যেন অপরূপ এক স্বর্গরাজ্য। পাথরের ওপর দিয়ে প্রবল বেগে বয়ে চলা ধলাইর কলকল শব্দে পাগল করা ছন্দ। সিলেট থেকে সাদা পাথর পর্যন্ত পুরোটা পথই প্রকৃতি তার সৌন্দর্যে বিমোহিত করবে যে কাউকে।ভারত থেকে নেমে আসা সীমান্ত নদী ধলাই নদীর জিরো পয়েন্ট এলাকা স্থানীয়ভাবে ‘সাদা পাথর’ এলাকা হিসেবে পরিচিত।
রাংপানি:সিলেটের জৈন্তাপুর উপজেলার মোকামপুঞ্জি এলাকায় অবস্থিত রাংপানি।সিলেট শহর থেকে প্রায় ৫৪ কিলোমিটার দূরে এই জায়গাটি। সেখানে যেতে হলে ব্যক্তিগত যানবাহন কিংবা জাফলং যাওয়ার বাসে উঠে পড়লেই হবে। জৈন্তাপুর শ্রীপুর পর্যটনকেন্দ্র পার হয়ে মোকামপুঞ্জি এলাকায় নামলেই পায়ে হেঁটে মাত্র আধা কিলোমিটার এগোলেই দেখা মিলবে স্থানটির। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে এতটাই ভরপুর যে এলাকার নামই হয়েছে ‘শ্রীপুর’। এই শ্রীপুরেই অবস্থান সীমান্তবর্তী নদী ‘রাংপানি’র।মেঘালয়ের জৈন্তা পাহাড়ের রংহংকং জলপ্রপাত থেকে স্বচ্ছ জলের রাংপানির উৎপত্তি। অনেকের কাছে শ্রীপুর পাথরকোয়ারি নামেও পরিচিত।রাংপানি আর পুঞ্জির আশপাশের এলাকায় আশি ও নব্বইয়ের দশকে ঢাকাই চলচ্চিত্রের একাধিক ছবির শুটিং হয়েছে। শাবনাজ-নাঈম জুটির প্রথম ছবি চাঁদনীর জনপ্রিয় গান ‘ও আমার জান, তোর বাঁশি যেন জাদু জানে রে’ ছাড়াও বেশ কিছু দৃশ্য শ্রীপুরের বিভিন্ন স্থানে চিত্রে ধারণ করা হয়েছিল।
মালিনীছড়া চা বাগান: সিলেটের চা বাগানের খ্যাতি রয়েছে সারা বিশ্বজুড়ে। দেশের মোট চায়ের ৯০ শতাংশই উৎপন্ন হয় সিলেটে।এজন্য সিলেটকে দুটি পাতা একটি কুঁড়ির দেশও বলা হয়। চারপাশে সবুজের সমারোহ। নীল আকাশের নিচে যেন সবুজ গালিচা পেতে আছে সজীব প্রকৃতি। বাংলাদেশের মোট ১৬৩টি চা বাগানের মধ্যে ১৩৫টি রয়েছে বৃহত্তর সিলেটে।এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য চা বাগান হলো- মালনীছড়া চা বাগান যা বাংলাদেশ তথা উপমহাদেশের বৃহত্তম এবং সর্বপ্রথম প্রতিষ্ঠিত চা বাগান।ইংরেজ সাহেব হার্ডসনের হাত ধরে ১৮৪৯ সালে ১৫০০ একর জায়গা জুড়ে প্রতিষ্ঠিত হয় উপমহাদেশের প্রথম চা বাগান মালনীছড়া। বাগানটি বর্তমানে পরিচলিত হচ্ছে বেসরকারি তত্ত্বাবধানে। ভ্রমনবিলাসী মানুষের কাছে আনন্দ ভ্রমন কিংবা উচ্ছ্বল সময় কাটানোর প্রথম পছন্দের স্থান হলো মালনীছড়া চা বাগান।
জাফলং যাওয়ার উপায়
জাফলং ভ্রমণের জন্য প্রথমে আসতে হবে সিলেটে।দেশের যেকোনো জায়গা থেকে বাস,ট্রেন এবং বিমান যেকোনো মাধ্যমেই আসা যায়।
ঢাকার ফকিরাপুল,গাবতলী,সায়েদাবাদ ও মহাখালী বাস টার্মিনাল থেকে সিলেটগামী অনেক বাস ছেড়ে যায়। সময় লাগে ৬ থেকে ৮ ঘন্টা।
ঢাকা থেকে ট্রেনে সিলেট যেতে কমলাপুর বা বিমানবন্দর স্টেশন থেকে জয়ন্তিকা,পারাবত,কালনী ও উপবনে যাওয়া যাবে। সময় লাগবে ৬ থেকে ৭ ঘন্টা।
আবার বিমানে করেও ঢাকা থেকে সিলেট যাওয়া যায়।
থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা
সাধারণত জাফলং এ ভ্রমণকারী পর্যটক রা সিলেট শহরেই রাত্রি যাপন করে। কারণ এখন থেকে সিলেট এর অনন্যা ভ্রমণ কেন্দ্রে যাওয়া সহজ আর সিলেট এর বেশির ভাগ হোটেল গুলো সাধারণত শাহজালাল মাজারের আশে পাশেই অবস্থিত। ভালো মানের আবাসিক হোটেল ও রয়েছে অনেক। তাছাড়া জাফলং থাকতে চাইলেও সেখানে কিছু হোটেল ও রিসোর্ট রয়েছে যেখানে রাত্রি যাপনের সুব্যবস্থা আছে।
জাফলং এ খাওয়াদাওয়া করার জন্য অনেক ভালো মানের খাবার হোটেল রয়েছে। তবে সেগুলোতে আগে থেকে খাবার অর্ডার দিয়ে রাখতে হয়। তাছাড়া সিলেট শহরেও অনেক ভালো ভালো রেস্টুরেন্ট ও খাবার হোটেল আছে।
ভ্রমণের সম্ভাব্য বর্ণনা :
প্রথম দিনঃ রাত ১০ টায় ঢাকা সায়েদাবাদ থেকে সিলেটের এর উদ্দেশ্যে রওনা দিবো।
🌄দ্বিতীয় দিনঃ সকালে বাস থেকে নেমে আমরা হোটেলে চেক ইন করে ফ্রেশ হয়ে সিলেটের বিখ্যাত পাঁচ ভাই রেস্টুরেন্টে নাস্তা করতে যাবো। সকাল ০৭ টা বাজে রিজার্ভ লেগুনা দিয়ে রাতারগুলের উদ্দেশ্যে রওনা হবো। রাতারগুল যাওয়ার সময় মাঝ পথে আমরা মালিনীছড়া চা বাগানে একটুভোলা গঞ্জে পৌঁছে আমরা রিজার্ভ বোটে ঘুরাঘুরি করব এবং ছবি তুলব। তারপর রাতারগুল পৌছে আমরা নৌকাতে উঠে সোয়াম্প ফরেস্ট ঘুরবো । রাতারগুল থেকে রিজার্ভ লেগুনাতে আমরা চলে যাব ভোলাগঞ্জ সাদা পাথরের উদ্দেশ্যে। দুপুরের সময় আমরা ভোলাগঞ্জ হোটেলে দুপুরের খাবার খেয়ে নেব। । এরপর বোটে করে সাদা পাথর যাব। সেখানে সবাই গোসল করে এবং খেলাধুলা শেষ করে ভোলাগঞ্জ থেকে আমরা বিকাল বেলায় আবার আমরা হোটেলের উদ্দেশ্যে রিজাভ লেগুনাতে করে রওনা দিব। হোটেলে এসে যে যার রুমে ফ্রেশ হয়ে রেস্ট নিয়ে সবাই মিলে সিলেট শহরে ঘুরবো। তারপর রাতে সিলেটের বিখ্যাত পাঁচ ভাই রেস্টুরেন্টে রাতের খাবার খাবো ও হযরত শাহজালাল ( রঃ) মাজার জিয়ারত করবো।
🧆খাবারঃ সকাল, দুপুর, রাত।
🌄তৃতীয় দিনঃ সকালে ঘুম থেকে উঠে সবাই নাস্তা করে ব্যাগ গুছিয়ে সেগুলো একটি রুমে রেখে আমরা দশটা বাজে রিজার্ভ লেগুনাতে করে চলে যাব জাফলং এর উদ্দেশ্যে। জাফলং যাওয়ার পথে আমরা রাংপানি পর্যটন স্পটে যাব। তারপর সেখান থেকে জাফলং পৌঁছে দুপুরের খাবার খাব। এরপর জাফলং এর জিরো পয়েন্ট ও মায়াবী ঝর্ণা যাব। তারপর জাফলং থেকে হোটেলের উদ্দেশ্যে রওনা দিব। যাওয়ার পথে আগুন পাহাড় ও হযরত শাহপরান মাজার ঘুরে যাব। হোটেলে গিয়ে রাতের খাবার খেয়ে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা দিব।
🧆খাবারঃ সকাল, দুপুর
🌄চতুর্থ দিনঃ সকালে ঢাকায় এসে পৌঁছাব।
বুকিং পদ্ধতি ও বিস্তারিত জানতে
ভ্রমণের অনেক উটকো ঝামেলা এড়াতে ট্রাভেল এজেন্সীর মাদ্ধমে ভ্রমণ করতে দেশের সবচেয়ে ফিমেল ফ্রেন্ডলি ও বাজেট ফ্রেন্ডলি ট্রাভেল এজেন্সী Sports Tourism Bangladesh এর সাথে যোগাযোগ করতে পারেন ,ভ্রমণকে সুন্দর ও আনন্দদায়ক করায় আমাদের প্রথম প্রতিশ্রুতি।
ভ্রমণ সংক্রান্ত যেকোনো বিষয়ে ভিসা ও এয়ার টিকেট জানতে ও সহযোগিতার জন্য ভিজিট করুন আমাদের পেজ :https://www.facebook.com/sportstourismbd
এবং কল করুন : 01820-109 109
ইনটারন্যাশনাল ও ডোমেস্টিক যেকোনো ধরণের ভ্রমণ প্যাকেজ পেয়ে যাবেন আমাদের কাছে।
**সরাসরি অফিসে এসে বুকিং মানি জমা দেয়া যাবে।(১১৩ পশ্চিম ধানমন্ডি, আরমান খান গলি,ঢাকা ১২০৫)
**** ট্রিপের ৭ দিন আগে ক্যান্সেল করলে টাকা অফেরতযোগ্য
এছাড়া অন্য যেকোনো প্রশ্ন বা যোগাযোগের জন্য নিম্নোক্ত নাম্বারে যোগাযোগ করার অনুরোধ রইলো।
যোগাযোগ:01820-109 109